ফিজিওথেরাপির
ওখানে বসে আছি। একই কম্পাউন্ডের মধ্যে স্পিচ থেরাপিও হয়। স্পিচ থেরাপির পেশেন্ট
বলতে নানা বয়সের বাচ্চাদেরই দেখি। বেশ দুপুর হয়ে গেছে। এক মা আর ছেলে বসে আছে। ছ'-সাত বছরের মিস্টি দেখতে বাচ্চা ছেলেটা কেন জানি উঠে এসে
হাসি হাসি মুখে আমার পাশে বসল। জানি হয়ত উত্তর দিতে পারবে না, তাও আদর করে মাথায় হাত বুলিয়ে নাম জিজ্ঞাসা করলাম। কী বুঝল
জানি না,
একটা আওয়াজ করল। ওর পিঠে হাত বুলাতে মনে হল, বারণ করছে, হাত সরিয়ে
নিলাম। তারপর ওদের ডাক এল ডাক্তারের কাছ থেকে। মা উঠে হাত বাড়িয়ে বলল, আও বেটা। ছেলেও উঠল। উঠে কী ভেবে হাসি হাসি মুখে আমার দিকে
হাত বাড়াল।
খুব
সম্ভব ছেলেটির স্প্যাস্টিক সমস্যা আছে। একটা সময় এদের নিয়ে কাজ করার আমার খুব
ইচ্ছা ছিল...।
আও বেটা, বলতেই ছেলেবেলায় আমার মায়ের মুখ মনে পড়ে গেল। আমি
স্প্যাস্টিক ছিলাম না, কিন্তু অনেকটা
বড় পর্যন্তই নানা অসুস্থতায় আমার কথা বলা, লেখা এবং অন্যান্য নানারকম বাধা ছিল। সমস্যা ছিল ম্যাচিওরিটিতেও। সেইসময়
ডাক্তার,
ওষুধ, চিকিৎসা, শুশ্রুষা এইসবই দৌড়ানো থেকে পাশে থাকা, সবই ছিল মা।
তবে এখন
মনে হয়,
প্রথাগত অসুস্থতার বাইরে 'অদৃশ্য অসুখ'-এ যারা ভোগে
তাদের জন্য আমাদের দেশে কোনো সংস্থা, কোনো চিন্তাভাবনাই নেই। অথচ এদের কিন্তু সুস্থ মানুষদের সঙ্গে সমানতালে লড়তে
হয়। করুণা কেউ চায় না, কিন্তু
সহমর্মিতা প্রয়োজন। এদের জন্য কিছু কাজ করার কিন্তু দরকার আছে।
অন্ততঃ
তুমি একা লড়ছ না, এই অনুভূতিতা
খুব জরুরি। শিশুদের জন্যে তো আরওই।
No comments:
Post a Comment