ঈশ্বরের কাছে পৌঁছানো এবং পৌঁছে দেওয়ার জন্য চিরকালই অনেক
মাধ্যম, অনেক রক্তপাত। মন্দির, মসজিদ, চার্চ, মনাস্ট্রি। তাদের মধ্যে আরও আরও ভাগ।
এতেও হয় না, একে ভাঙছে ও, ওকে ভাঙছে এ। আমার ঈশ্বর, তোমার আল্লা, অথবা আমার গড
তোমার ভগবান। আমার ঈশ্বরই শ্রেষ্ঠ, তোমাকে শুদ্ধু আমার ঈশ্বরই মানতে হবে, নাহলে
তোমার ঘাড় মানবে মানে ঘাড় আর মাথায় থাকবে না আর কী। কুপিয়ে হত্যা, গুলি, বোমা –
ঈশ্বরের কাছে সোজা পৌঁছানোর এবং পৌঁছে দেওয়ার কত সহজ উপায়!
মোবাইল ফোন, হোয়াটস অ্যাপ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের যুগে
ভালোবাসারও অনেক মাধ্যম। চিঠির অনন্ত প্রতীক্ষা অথবা না পাওয়া আর হারিয়ে যাওয়ার
হাহাকার নেই।
ওদিকে রেকর্ড তো অনেক অতীত, ক্যাসেটও বদলে গেল
সিডি-ডিভিডিতে, তাও বদলে ইউটিউব আর নানা ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা গান বাজছে মোবাইলে,
ল্যাপটপ, ট্যাবলেটে।
অথচ আজও গীতবিতানের গান বাজে সুচিত্রা মিত্রের কন্ঠে – ‘আরো
আরো প্রভু, আরো আরো, এমনি করে, এমনি করে আমায় মারো...’। একলা ঘরে গলা মেলাই যখন এই
পৃথিবীতেই ঈশ্বর আর ভালোবাসার গভীর শান্ত পরশ পাই। শৈশবে মায়ের সঙ্গে গলা মিলিয়ে
গাইতে গাইতে আর বড় হতে হতে জীবনের সব দুঃখ-কষ্ট ব্যথা বেদনায় দেখেছি এই আমার
ভালোবাসা পৃথিবী ঈশ্বর।
আর ঠিক কোথায় যেন তখনই সুচিত্রা গেয়ে ওঠেন – ‘কোথায় ফিরিস পরম শেষের
অন্বেষণে/ অশেষ হয়ে সেই তো আছে এই ভূবনে/... কোথায় ফিরিস ঘরের লোকের অন্বেষণে/পর
হয়ে সে যে দেয় যে দেখা ক্ষণে ক্ষণে...'।
No comments:
Post a Comment