Thursday, November 12, 2015

আমি খুঁজছি তোমার ঠিকানা

লেকটাউন জয়া সিনেমার ঠিক পাশের গলিতে ঢুকেই ডানহাতে একটা ঝুপড়ি দোকান আছে চায়ের। খিদে পেয়েছিল, ডিম-পাঁউরুটি বলে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। দেখছি দোকানদারের ধীরেসুস্থে বানিয়ে তোলার ভঙ্গী। আমার পাশে শ্যামলা রঙের রোগা পাতলা একটা লোক দাঁড়িয়ে দোকানদারের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিল। হঠাৎ আরেকজন এসে কিছুটা চিন্তিত মুখে জিজ্ঞাসা করল, এখানে প্রিয়া বিস্কুটের দোকান কোথায় আছে জানেন? দোকানদার ধীরেসুস্থে ঠিকানা জানতে চায়। কিন্তু জয়ার কাছে ছাড়া কোনো ঠিকানা সে জানে না। দোকানদার বলে, কোন রাস্তা তাও জানো না? জয়ার পাশে তো কতকিছুই আছে। একদম সত্যি কথা। বিভ্রান্ত দেখায় লোকটিকে। পাশের থেকে শ্যামলা ভদ্রলোক মন্তব্য করেন, এখন তো সবারই সিঁড়ির নীচে বিড়ির দোকান – সব বাড়িতেই একটা-দুটো অফিস রয়েছে, ঠিকানা না জানলে হয়?  সবে পাঁউরুটি কাটা হয়ে ডিম গোলা হচ্ছে। আমি বলি, ফোন নম্বর তো আপনার কাছে নিশ্চয় আছে, ফোন করে ঠিকানাটা জেনে নিন। লোকটি কিঞ্চিৎ স্বস্তির মুখ করে বলে, আছে, আছে। দোকানদার বলে, ঠিকানাটা জেনে নিয়ে বলুন আমি সব চিনি, বলে দেব। লোকটি বোধহয় ফোন করতে সরে যায় এবং আর ফিরে আসে না। পাশের শ্যামলা লোকটির কথা কানে আসছে। ইতিমধ্যেই বুঝলাম লোকটি ফ্রিজ সারায়, পাকা চাকরি কিছু নেই, সামনে ছোট মেয়ের বিয়ে। সবই একই রকম হাসিমুখে বলে যাচ্ছে, দোকানদার এবং অপরিচিত আমাকে ভারী চেনা মুখ করে। ওরই মাঝে ডিম-পাঁউরুটির ঠোঙা বার করে দোকানদারের নির্দেশে। ঠোঙা হাতে নিয়ে দাম মিটিয়ে পাঁউরুটি চিবোতে চিবোতে হাঁটা দিই। ভাবতে ভাবতে যাচ্ছিলাম যে, লোকটা খুঁজে পেল কীনা দোকানটা আদৌ।


‘সারি সারি সব বাড়ি, যেন সার বাঁধা সৈন্য, সব একধাঁচ সব এক রঙ তুমি কোথায় থাক অনন্য’ ... ওই যাহ্‌ প্রিয়া বিস্কুট...!

No comments:

Post a Comment