Friday, June 30, 2017

দুঃখের জাদু


দুঃখ হলে ফের শব্দ-অক্ষরের কাছে ফিরে যাই নিঃশব্দে। ওদের ঘিরে নিই চারপাশে। ছেলেবেলার মায়ের আঁচলের মতো কিচ্ছু দেখা যায় না আর। ওরা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে গল্প শোনায় সেই অলীক দেশের যেখানে নাকি কেউ দুঃখ পায় না অথবা দুঃখগুলো ম্যাজিকের মতো খুশী হয়ে যায়। আর আমার দুঃখগুলোও তখন চোখের পাতার ওপর তিরতির করে কাঁপতে কাঁপতে বদলে যেতে থাকে জাদুতে। সুখের অথবা দুঃখের জাদুতে। আর আমি ঘুমিয়ে পড়ি একটা শান্ত স্বপ্ন দেখতে দেখতে।

ঋণ


কেউ কারো জায়গা নেয় না হৃদয়ে

চিরদিন যে যার মতো যায় রয়ে

ভিন্ন ভিন্ন ক্ষত ও যন্ত্রণা

যাপন বা জীবন থামে না।

সবারই আলাদা ঋণ

জমে ওঠে, কেটে যায় দিন।

হাতে-হাত অথবা শূন্যতা

এভাবেই চলে যাওয়া, হাঁটা।

দু-এক মুঠো


তুই কিছুটা অ-সুখ তো নে

একটু-আধটু, দু-এক মুঠো।

শেষ বিকেলের আলোর মতো

নিভে আসা শরীর থেকে।

কিছু তো নে।

ক্লান্ত চোখের পাতার ভাঁজে

লুকিয়ে থাকে যে খড়কুটো।

এক আঁজলা জলের মতো।

কিছু তো নে।

বৃষ্টিফোঁটা শুকিয়ে আসে রুক্ষ্ম

ঠোঁটের কোণায় কোণায় ফুটিফুটো।

হারিয়ে যাওয়া শব্দ যতো

কিছু তো নে।

দু-এক মুঠো।

নাম


আগুন কিম্বা জল -

যে নামে হোক ডাকতে পার,

পুড়তে পারি অথবা টলমল।

ভালোবাসা নেই


ভালোবাসা নেই

রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকে নিহত উলঙ্গ গাছ।

ভালোবাসা নেই

তোমার আমার শিশু ধর্ষিত আজ।

ভালোবাসা নেই

ঘরে ঘরে পাশাপাশি শুয়ে থাকে মানুষের লাস।

ভালোবাসা নেই?

তবু শব্দ অক্ষরে বুনে যাই বাঁচার আওয়াজ।

কবিতা নয়


শব্দ খুঁজে বেড়াই।

শব্দের লতাপাতা জড়াই

ভিজি শব্দের বৃষ্টিফোঁটায়।

শব্দ খুঁজে বেড়াই।

গরম ভাতের সুবাস মাখা,

গাছের শান্ত ছায়া ভরা,

ভোরের নরম আলোর মতো

শব্দ খুঁজে বেড়াই

আজীবন।

যে শব্দ মুছিয়ে দেবে চোখের জল।

হারিয়ে দেবে সন্ত্রাসের আর্তনাদ।

বুজিয়ে দেবে ধর্মের লাল চোখ।

যে শব্দ মানুষের হাত থেকে কেড়ে নেবে

পরশুরামের কুঠার, যাদবের মুষল

আর সাম্রাজ্যবাদের আণবিক অস্ত্র।

সেইসব শব্দ খুঁজে বেড়াই।



কবিতা নয়, শুধু

শব্দ খুঁজে বেড়াই আজীবন।