চাকরি বা ফ্রি-ল্যান্সিং-এর সময় কাজ করতে করতে জেনেছিলাম
ভ্রমণ কাহিনি কতরকম হয়? মানে পত্রিকাগুলোয় লেখার পরিপ্রেক্ষিতে।
১) তথ্যমূলক – শুধুমাত্র তথ্যই থাকে। কীভাবে যাবেন, কী
দেখবেন, কোথায় থাকবেন ইত্যাদি।
২) বিবরণমূলক – এটি আবার মূলতঃ দুটি ভাগে বিভক্ত – তথ্যমূলক
এবং কাহিনি মূলক। কাহিনি মূলক লেখা শুধুমাত্র নামীদামীদের জন্য সীমাবদ্ধ। অর্থাৎ
যাঁরা যা লিখবেন, তাই লেখা বলে স্বীকৃত। তথ্যমূলক লেখা আবার তিন ধরণের – বেড়িয়ে এসে
লেখা, না বেড়িয়ে কোনো জায়গা নিয়ে লেখা যেন বেড়ানো আছে, বেড়িয়ে কোনো জায়গা নিয়ে এমন
লেখা, যেন যায় নি। এও কিন্তু সেই কীভাবে যাবেন, কী দেখবেন, কোথায় থাকবেন, কী খাবেন
গোছের লেখা অধিকাংশই, শুধু প্রথম পুরুষে কখনও, কখনও বা তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে।
সত্যিকারে ভ্রমণ কাহিনির বহু ভাগ আছে, যা আমি গবেষণায়
উল্লেখ করেছি, পরে কখনও এখানেও করব। নিজে লিখতে গিয়ে মনে হয়েছে ভ্রমণ কাহিনি মানে
নিজের দেখা, নিজের অনুভূতিকে তুলে ধরা। এমনভাবেই তুলে ধরা যে প্রথম পুরুষ লেখক এবং
প্রথম পুরুষ পাঠক পরস্পর মিশে যাবে, যে অনুভব বিভূতিভূষণের লেখায় পাওয়া যায়।
পাঠকের চোখ দিয়ে দেখতে পারলে, হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারলে তবেই ঠিক ভ্রমণ কাহিনির
লেখক হওয়া যায়। তার মানে এই নয় যে লেখায় বিন্দুমাত্র তথ্য থাকবে না, বরং যতটা
সম্ভব তথ্য থাকবে, যাকে পড়তে গিয়ে তথ্য পড়ছি বলে আলাদা ভাববে না পাঠক।
তবে বেড়ানোর লেখা মানে শুধুই নিজের অনুভূতি নয়, অনুভূতিটা
তৈরি করতে বিস্তর পড়াশোনাও লাগে। শুধু কোথাও গেলাম আর নিজের কী মনে হল সেটা লিখে
ফেললাম, অন্যের কেন ভালোলাগবে তা? আসলে এটাই আসল কথা, লেখাটা অন্যের জন্য, অন্যের
ভালোলাগার জন্য। এইটা মনে রাখলেই ভালো লেখা যায়। আমার লেখা পড়ে জায়গাটা, সেখানকার
প্রকৃতি আর মানুষজনকে ভালোবেসে ফেলবে মানুষ। কীকরে যাওয়া যায়, কোথায় থাকা যায় এমন
অনেককিছু তো ইন্টারনেটে সার্চ দিলেই পাওয়া যায়, কিন্তু অনুভবে কী পাওয়া যায়, তা
পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়াই বোধহয় ভ্রমণ কাহিনি লেখার মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত আজকে।
No comments:
Post a Comment