যতদিন সরকারি বিভিন্ন জায়গায় বা ফর্মে ধর্ম লিখতে হবে,
ততদিন পর্যন্ত ভারত কিছুতেই ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ নয়। ব্যক্তিগতভাবে যে কেউ যে কোনো
ধর্মাচরণ করতেই পারেন কিন্তু ধর্ম নিরপেক্ষ কোনো দেশে সরকারিভাবে কোনো ধর্ম কারোর
থাকতে পারে না।
আমি এখনোপর্যন্ত কখনও কোথাও বাধ্যতামূলকভাবে ধর্ম লিখতে হলে
‘হিউম্যানিটি’ বা ‘মানবতা’ লিখি। ভাবছি এরপর ‘ভালোবাসা’ বা ‘love’ লিখলে কেমন হয়?
সত্যিই কি আমাদের প্রকৃত কোনো ধর্ম আছে? আমার অন্ততঃ
অফিসিয়ালিই নেই। বাবার দিক থেকে পরিবারগতভাবে এক সময়ে হিন্দু হলেও বাবার ঠাকুরদা
এক ব্রাহ্ম মেয়েকে বিয়ে করায় সেইসময় ত্যাজ্যপুত্র হয়েছিলেন। আমার মায়েরা
পরিবারগতভাবে বৌদ্ধ, কিন্তু মায়ের ঠাকুরদাদা আবার খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত
হয়েছিলেন এবং তিনি এক বার্মিজ মেয়েকেও বিয়ে করেছিলেন, আমার মায়ের দিদিমাকে ছাড়াও।
ফলে আমার মধ্যে এক মুসলিম ছাড়া পরিচিত বেশ কয়েকটি ধর্মের উত্তরাধিকার রয়েছে। আমার
জন্মের সময় এবং তারপরেও দীর্ঘদিন মানে আমার বিয়ের ঠিক আগে অবধি বাবা-মা লিভ ইন
রিলেশনশিপে ছিলেন। আমার হিন্দু পরিবারে বিয়ে হলেও হিন্দুমতে হয়নি। এবং
শাঁখা-সিঁদুর জাতীয় সংস্কার আমি মানি না। আমার বাড়িতে ঠাকুর বা কোনোরকম কোনো
পুজো-আচ্চারও বালাই নেই, যদিও সমস্ত ধর্মের প্রসাদ খেতে আমার দারুণ লাগে। ফলে,
ধর্মের কলামে প্রচলিত কোনোটা কেন লিখব সেটাই আমার মাথায় ঢোকে না।
আমার পাসপোর্ট নেই। বাংলাদেশ যাওয়ার খুব ইচ্ছে, তার জন্য
পাসপোর্ট করালে ধর্ম আমার যা মনে হবে লিখব। দেখি ধর্মনিরপেক্ষ ভারত সরকার কী বলেন?
No comments:
Post a Comment