Wednesday, November 4, 2015

অসম্পূর্ণ!

একটা সময় নিয়মিতই গল্প লিখতাম ছোট পত্রিকায়। তারপরে বেড়ানোর লেখা, 'আমাদের ছুটি', গবেষণা সব করতে করতে আর লেখা হয় না। বিস্তর অসম্পূর্ণ গল্প আছে, খানদুয়েক হলেও হতে পারে উপন্যাসও। আজকাল মাঝে মাঝেই সেইসব অসম্পূর্ণ চরিত্রেরা আমাকে জ্বালাতন করছে দিনে-রাতে।

সেই যে ডাক্তার মৃত্যুদণ্ড মানে না বলে বাধ্য হয়ে মানুষকে মারতে পারবে না বলে নিজে আত্মহত্যা করল, যুদ্ধের জুতসই বর্ণনা মাথায় না আসায় যার মৃত্যুকালীন চিঠিটি আমি শেষ করতে পারিনি, তিনি মাঝেমাঝেই অস্থিরভাবে পায়চারি করতে করতে আমায় বলেন, লেখ, লেখ, আমি যে কোনোদিকেই যেতে পারছি না।

মাঝে মাঝে আরুষি এসে আমার গলা জড়িয়ে ধরে ঝুলতে ঝুলতে গাল ফুলিয়ে বলে, আমার কথা, আমার মুখে লিখবে বলেছিলে, কই, কত তো সিনেমা হচ্ছে, আমার কথা বলছে না তো? তুমি কবে লিখবে?

সেই যে আধুনিক রূপকথার গল্পটা নাতি-নাতনিদের বলছিল ঠাকুমা না দিদিমা, নিঠারির মানুষখেকো রাক্ষসের গল্প থেকে শুরু করে গোধরার দৈত্যের কথা। তারা তো এখনো অভিযানে বেরোতেই পারল না। ঠাকুমা-নাতনি সবাই হট্টগোল বাঁধাচ্ছে নিত্যদিন।

বারো বছর পর এগারো জন কাপল দ্বিতীয়বার চাঁদিপুর যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েও যেতে পারছে না, সবাই মনে মনে টেনসড এরমধ্যে কে খুনী ছিল, সেও কি আসবে? আরও কি কোনো ঘটনা ঘটবে

অথবা বন্ধু সুপ্রতিমের চরিত্রের খানিক আদলে যে ছেলেটা তার শুটিং টিম নিয়ে একজায়গা থেকে অন্য জায়গায় রওনা দিয়েছিল, সেও মাঝে মাঝে চুপ করে বসে থাকতে হচ্ছে বলে রেগে ওঠে। আমার আর সুপ্রতিমের সঙ্গে বসা হয় না, বসা হয়না মায়ের সঙ্গেও। মাকে নিয়েও কিছু একটা লিখব মাঝে মাঝেই ভাবি।

আর তিন্নি তো বড় হয়েই গেছে ওকে নিয়ে লেখা এখন বেশ কঠিন।

আমার অপ্রকাশিত গল্পের চরিত্ররা জ্বালায় না অবশ্য, বোধহয় তাদের আর কিছু করার নেই বলে। একমাত্র প্রথম গল্পের চরিত্রেরা, যাদের নাম বদলে আবার নতুন করে লিখতে শুরু করলাম কিছুদিন আগে তারা মাঝে মাঝে আমার কানের কাছে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, আমরাই কিন্তু তোমার প্রথম চরিত্র। হ্যাঁ, ওদের দাবী কিছু বেশি বইকি। কিন্তু আমি আদৌ কাউকেই লিখব কীনা জানিনা। অথবা নতুন আরও আরও অসম্পূর্ণ কাহিনি।


জানিনা আগামী দিনে আরও আরও অসম্পূর্ণ চরিত্রেরা আমার নিদ্রাভঙ্গ করবে কীনা!

No comments:

Post a Comment