Monday, December 14, 2015

কৃষ্ণকলির কথা

শ্যামলকান্তি রোদ্দুর হতে পারেনি।
এমনটাই হওয়ার ছিল যদিও,
নাহলে তাকে নিয়ে আর কবিতা হত না।
শ্যামলকান্তি রোদ্দুর হতে পারেনি,
যেমনটা আলো বা মেঘ হতে পারেনি
সেই শ্যামলী মেয়েটি।
এমনটা হওয়াও খুব স্বাভাবিকই ছিল।
কারণ তাকে নিয়ে কোনো কবিতা লেখা হবে না।

তাকে নিয়ে কেউ কখনো কোনো কবিতা লেখেনি,
কিন্তু অ্যাসিড ছুঁড়েছিল মুখে তার প্রেমিক!
গায়ে আগুন, স্বামী নিজের হাতেই দিয়েছিল।
নাহ্‌, তাকে কোনো কবিই শব্দের আখরে আঁকেনি –
যাকে ধর্ষণ করেছিল সাতটি পুরুষ, একে একে;
তারপরে পেট কেটে নাড়ি টেনে বার করে উল্লাস করেছিল –
যে নাড়ির বন্ধনে একদিন তারা সকলেই বাঁধা ছিল মায়ের সঙ্গে।
নাহ্‌, এদের কারোর হরিণ চোখ দেখে গান বাঁধেনি কেউ –
যে মেয়েটা কাল বিক্রি হয়ে গেল দালালের হাতে,
বেচেছিল তার নিজের বাপই খিদে বা নেশার টাকার বিনিময়ে।

যখন আমরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত -
প্রেম অথবা যৌনতা নিয়ে কবিতা লিখেছ ঢের।
আর যখন নিস্প্রয়োজন -
অনায়াসে ঠেলে দিয়েছ যাহান্নামে।
আসলে কবিতার কাল্পনিক নায়িকা হওয়ার চেয়ে
বাস্তবে সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকাটাই
বিষম জরুরি আমাদের কাছে। আমরা
রোদ্দুর, মেঘ বা আলো কোনোকিছুই হতে চাইনি,
হতে চাইনি কৃষ্ণকলিও। চিরকাল মানুষ হতে চেয়েছি –

ভালোয়মন্দয় সুখে-দুঃখে রক্তমাংসের আস্ত একটা মানুষ।

No comments:

Post a Comment