হিন্দুস্থান
কেবলস পরিবার গ্রুপে অনেকদিন আগেই বাবার ছবি পোস্ট করতে বলেছিল। এদ্দিনে করলাম।
খুব স্বাভাবিকভাবেই বাবা নেই জেনে তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের খারাপ লাগছে। আত্মার
শান্তি কামনা করি ইত্যাদি লিখছেন। আর আমার সেসব পড়তে গিয়ে ভয়ানক অস্বস্তি করছে। আসলে আমার এই ছ’বছরেও বাবা নেই এই অনুভূতিটা মনের মধ্যে একেবারেই বসেনি। আমার
দোর্দণ্ডপ্রতাপ বাবা যেন এতটাই জীবন্ত ছিল যে কিছুতেই নেই হয়ে যেতে পারে না। এই তো
গতবছর শান্তিনিকেতনে অবলা বসুর বইয়ের জন্য ছবি তোলার কাজটা শেষ হলে বেরিয়ে এসেই
খুশিমনে বাবাকে জানাতে গিয়ে মনে পড়ল নাহ্, ফোন করা যাবে না। এই বুড়ো বয়সে এসে
ইংরেজি এম এ দিতে গিয়ে সব কটা পেপারে পরীক্ষা দেওয়ার আগে বলে নিয়েছি, দেখো বাবা, যেন
পাশটা করি, নইলে মানসম্মান যাবে।
দেবীর
জন্য অনুভবটাও তাই। হয়ত আরও বেশি। এখনও সেই সতেরো-আঠেরোতেই যেন দেবী আটকে আছে।
চাইলেই ওর সঙ্গে ওদের বাড়ির ছাদের সিমেন্টের বেঞ্চিতে বসে আড্ডা দেওয়া যাবে, অথবা
হাঁটতে হাঁটতে যে ধানক্ষেত ওরই মতো আজ আর নেই সেখানে হারিয়ে যাওয়া যাবে আল ধরে। বড়
হওয়ার পর কম দেখা হওয়ায় ওর বিয়ের পরের চেহারা আমার মনে দাগই কাটেনি। অনায়াসে আমার
কিশোরী বয়সটা জুড়ে বসে থাকে ও।
শুধু তো
মৃত্যুই নয়, জীবনও কেড়ে নেয় কোনো কোনো কাছের মানুষকে। জীবনের কোনো এক বাঁকে
অন্যপথে হারিয়ে যায় তারা। অথচ সেই সময়টা জুড়ে কেমন অমলিন রয়ে যায়, চিরকাল।
ওই যে,
কেউ হারায় না এ জীবনে। আমার তো তেমনই মনে হয়।
"শুধু তো মৃত্যু নয়, জীবনও কেড়ে নেয়..."
ReplyDeleteদারুন বাক্য বন্ধ।
সত্যি বলছি, আমার এখনও বেমক্কা গলার ভেতর দলা পাকাতে থাকে অবুঝ কষ্ট। কিছুতেই কাটিয়ে উঠতে পারছি না।
আপনার লেখাটি যদি কিছু উপশম দেয়।
হুম...
ReplyDelete