Sunday, September 27, 2015

লাবণ্যর জন্যে

ঢাকা থেকে লাবণ্য এসেছে কলকাতায়। ফেসবুকে আমার সঙ্গে সামান্য পরিচয়। আমাকে ও ভালোবাসে। কেন যে ভালোবাসে তা ওই জানে। ওর ভারী মিস্টি একটা ছেলে আছে - শঙ্খনীল। ফেসবুকে নীলের ছবি দেখে আমার ছোট্টবেলার একটা বন্ধুর কথা মনে পড়ত। অমনিই মিস্টি আর শান্ত ছেলে ছিল।

লাবণ্য বলেছিল, গতকাল কলামন্দিরে আসবে একটা অনুষ্ঠান দেখতে কারো সঙ্গে। কলকাতা ও একেবারেই চেনে না। আমি যদি যাই দেখা হবে। শরীর এখনও খুব দূর্বল। যেতে ইচ্ছে করছিল কিন্তু শরীরে দেবে কী না বুঝতে পারছিলাম না। তাই যাবই এমন কথাও দিইনি। ওর স্থানীয় কোনো ফোন নম্বরও ছিল না। আমার নম্বর দিয়েছিলাম ওকে। লিখেছিল শরীরটা ভালো নেই, ডাক্তার দেখাতে এসেছে। তাই চিন্তাও ছিল। বিকেলে হারা উদ্দেশ্যেই বেরিয়ে পড়লাম। যদিও বাবা আর মেয়ে মিলে পৌঁছে দিল, ফেরার সময় নিয়েও এল।

প্রায় ঘন্টাখানেক বসে থাকার পর এল। কথা হল খানিকক্ষণ। কথায় কথায় ছেলের কথা বলছিল। ওর মনে হয় নিজের জন্যে নয়, ছেলের জন্যেই ওকে বাঁচতে হবে, ওর তো কেউ নেই। রিপোর্ট সব ভালো আসায় খুশি আছে। আমাকে বলল, তোমায় ভারী মিস্টি দেখতে, আমায় একটুও মিস্টি দেখতে নয় বলো? আমি আসলে মুখে খুব গুছিয়ে বলতে পারিনা। এমনিই খুব ক্লান্ত লাগছিল, কথাই বলতে পারছিলাম না। আসলে চোখ-নাক-মুখের সৌন্দর্যে মানুষের সৌন্দর্য হয় না, সৌন্দর্য থাকে মনে আর ব্যবহারে আর যে দেখে তার অনুভূতিতে। আমার লাবণ্যকে বেশ ভালোলাগে, সেটা মিস্টি না তেঁতো কখনো ভেবে দেখিনি। এই তো সবে আলাপ হল। আর মানুষের আপনজন যে কোথায় থাকে তা কেউ জানে না। হয়তো তুমি নিজেকে ভাবছ একা, অথচ অনেক দূরে কেউ তোমারই জন্য ভেবে যাচ্ছে, হয়তো সারাজীবনেও তুমি তাকে চিনলে না।

মানুষ বড় আশ্চর্য। যেমন সে অকারণে ঘৃণাও করতে পারে তেমনি ভালো এক সেই বাসতে পারে।


মাঝে মাঝে কারোর জন্য এই হারা উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়তে বেশ ভালোলাগে আমার।

No comments:

Post a Comment