রোববার বিকেলে অপূর্বদা ফোন করে কুশল সংবাদের মাঝে জানতে
চাইছিলেন, ‘তোমার দাঁতের খবর কি?’
বললাম, এখনও তো শেষ হয়নি, তবে যার ছোটগল্প হওয়ার কথা ছিল,
সেটা উপন্যাসে দাঁড়িয়েছে।
আজ সকালে বেদনাহত হয়ে গিয়েছিলাম ডাক্তারের সমীপে (এ আমার
পুরোনো ডাক্তার, শোভাবাজারে, দাঁতের ব্যাপারে এর সঙ্গে আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা ভালো,
তবে প্রায় কাছাকাছি বয়সী হওয়ার জন্য বোধহয় মাঝেমাঝে ঝগড়াও হয়।)। তারই কিছু কথোপকথন
–
ডাক্তার – ঠিক যতটুকু
ব্যথা ততোটুকুই বলবেন, একটুও বাড়িয়ে বলবেন না যেন।
রুগী – কী মুশকিল,
আমি তো কমিয়েই বলছি, অন্য কেউ হলে তো চিৎকার করত, নেহাত আমার ব্যথায় থাকার অভ্যেস
আছে।
ডাক্তার – এক্স-রে
করে দেখে নিলাম তো, সব ঠিক আছে। ওই সিমেন্ট থেকে কারো কারো জ্বালামতো হয়, ওই যে
পুড়িয়ে দিলাম না?
রুগী – (বিষন্ন
গলায়) হুঁ। (মনে মনে, সিমেন্ট তো কাল দিলেন। পুড়িয়ে সে তো শুক্রবার, বললেন যে
জিঙ্ক অক্সাইড! কী জানি বাপু, তা ভালোয় ভালোয় মিটলেই হল – ইঁট, সিমেন্ট, চুন, সুড়কি... কোনোটাতেই
আপত্তি নেই আমার)
ডাক্তার – (কী সব
লাগিয়ে টেম্পোরারি কভারিংটা আরেকটু চেঁছে চেপে বসান। এর আগে দাঁতের ওখানটাতেও কী
সব করেছেন।) লাগছে?
রুগী – আঁ, আঁ,
আঁ...
ডাক্তার – (আরেকটু
চেপে বসিয়ে) কতটা ব্যথা লাগছে?
রুগী – (কিঞ্চিৎ
রাগত এবং হতাশ গলায়) লাগছেই তো, খুব ব্যথা লাগছে। লাগছে বলে ব্যথার জায়গায় আরও
লাগিয়ে দেবেন? (মনে মনে, আপনি কেমন লোক মশাই? শুনেছি পুলিশে ছুঁলে আঠেরো ঘা,
দাঁতের ডাক্তারে ছুঁলে কত?)
ডাক্তার – ( কী কী
করতে হবে বলার শেষে প্রেসক্রিপশন লিখতে লিখতে) কিচ্ছু টেনশন নেবেন না, ঘাবড়ানোর
কিছু নেই, নো টেনশন।
রুগী – (বেদনার্ত
হাসিতে) হুঁ। (তারপর ডাক্তারের অ্যাসিস্ট্যান্টের উদ্দেশে) বুঝলেন, অতি দুঃখে
মানুষের হাসি পায় ...।
এখন শুধু এটাই চিন্তার, ট্র্যাজিক উপন্যাসটার শেষে গিয়ে মধুর
মিলন হবে তো?
No comments:
Post a Comment