ওড়িশার
শিল্প বা কৃষি উন্নয়নের বর্তমান পরিস্থিতি ঠিক কী তা আমার জানা নেই। শুধু বেড়াতে
গেলে চোখে পড়ে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাস্তাঘাট। কোথাও রাজনৈতিক হোর্ডিং, কী প্রচার,
আলোচনা কিচ্ছু চোখে-কানে পড়ল না। এই চারদিনে একবার মাত্র একটা পার্টি অফিসের
একেবারে গায়ে খুব ছোট, প্রায় চোখেই পড়ে না, মুখ্যমন্ত্রীর এমন একটা ছবি দেখে তো
রীতিমতো অবাকই লাগল।
ধৌলি
যাওয়ার পথে রাস্তার ধারের যে দোকানটায় সকালে চমৎকার লুচি তরকারি আর ধোসা সবাই মিলে
ভাগ করে খেলাম, সেই দোকানের পিছনে টিনের চালের বাথরুমটাও দিব্বি ঝকঝকে তকতকে। এই
প্রথম ধোসার সঙ্গে ছোট্ট এক বোতল করে কোক ফ্রি!
একশো বছর
আগেও বাঙালি মেয়েরা অন্য রাজ্যে আর দেশে গেলে নিজের রাজ্যের সঙ্গে তুলনা করত, আমিই
বা বাদ যাই কেন? মনে পড়ছিল দার্জিলিং বেড়াতে গিয়ে বৌদ্ধ মন্দিরের কাছের বাথরুমটার
কথা। ওই যে লিখেছিলাম, যতদিন না ট্যুরিস্ট লোকেশনগুলোয় বাথরুম পরিস্কার হচ্ছে
ততোদিন পশ্চিমবঙ্গ পর্যটনের কিস্যু হবে না। দার্জিলিং-এর গর্ব টয় ট্রেন যে রাস্তায়
যায় তা আর বলার মতো নয় – দুর্গন্ধে গা গোলাতে গোলাতে আর উড়ে আসা পোকা তাড়াতে তাড়াতে
নিজেরই খুব ঘেন্না লাগে এই রাজ্যের মানুষ বলে। অথচ সারা ভারতবর্ষে এত প্রাকৃতিক
বৈচিত্র্য আর কোনও রাজ্যেই নেই।
ইদানিং
কলকাতার বেশ কিছু জায়গায় রাস্তাঘাটের কিছু উন্নতি চোখে পড়েছে। কিন্তু আগামী বর্ষা
অবধি সেসবে ভরসা রাখা যাবে কিনা আমার জানা নেই। তবে আরও বেশি যেটা চোখে পড়ে সেটা
নির্লজ্জ আত্মপ্রচার। ওই যে সুকুমার রায় বলে গেছেন – কাজের চেয়ে জোর গলা যার
তিনিই লাউডস্পিকার।
শুধু কী
নোংরা বাথরুম? যেদিকেই তাকাও দেওয়াল থেকে আকাশে - নানা রঙের পতাকা, হোর্ডিং, চিহ্ন
এবং সর্বোপরি সব ছাপিয়ে একটিমাত্র মুখ, মুখ এবং মুখ।
এই
চারদিন অন্ততঃ চোখ-কান-নাক সবকটা একটু বিশ্রাম পেয়েছিল।
No comments:
Post a Comment