Tuesday, July 28, 2015

নারী এবং স্বাধীনতা

দৃশ্য এক -
মেট্রোয় যাওয়ার পথে পাশে বসেছিল দুই বিদেশিনী। আমার বাঁপাশে একজন, তার পাশে এক বাঙালি মহিলা, তাঁর ওপাশে আরেক বিদেশিনী। মনে হল হয়তো দুই বান্ধবী হবে। মনে মনে ভাবলাম, আহা দুজনে মিলে কেমন একা একা (!) ভিনদেশ দেখতে এসেছে। চুপচাপ বসে বাঙালিনীর সঙ্গে তাদের আলাপচারিতা শুনছিলাম। সদ্য আলাপ না পূর্বালাপ বুঝলাম না। দুই মেয়েই একদম সাজেনি। লম্বা ঢোলা প্যান্ট আর গেঞ্জিতে স্বচ্ছন্দ সুন্দরী। দীর্ঘ সোনালি চুল কোনোমতে কালো গার্ডারে আটকানো। চোখে কাজল, ঠোঁটে লিপস্টিক, নখে নেলপালিশ, বাহারি গয়না এবং নানারকম পোশাকের অসংখ্য বাঙালি মেয়ের মাঝে নিরাভরণ দুজনে আলো হয়ে ফুটেছিল। আমার পাশের মেয়েটিকে দেখে তো মনে হচ্ছিল যেন কোন গল্পের বই থেকে উঠে এসেছে। যাক্‌, তার হাতের বড় হয়ে যাওয়া ঈষৎ হলুদ নখের দিকে তাকিয়ে আমি নিশ্চিন্ত হলাম আমার হাত সম্বন্ধে। সেগুলোরও একই দশা কীনা। সাতদিনের জিনস আর দিন তিনেকের জামা আর কোনোমতে আঁচড়ানো চুল নিয়ে আমি বিন্দুমাত্র ঘাবড়ায়িত ছিলাম না অবশ্য।ওদের সঙ্গে সামান্যই আলাপ হলো একদম নামার সময়। বাঙালি মহিলাটি আগে নেমে যাওয়ায় আমার ধারণাই হয়েছিল যে টালিগঞ্জ এলে ওরা বুঝতে পারবে না। কথাতেই বুঝেছিলাম টালিগঞ্জে নামবে। হলোও তাই। তবে আমি ওদের নামিয়েই ছাড়লাম।

দৃশ্য দুই -
মেট্রোয় ফেরার সময় আমাদের সামনের মহিলা সিটের দুটি চরিত্রের দিকে চোখ পড়ল। একটি তরুণী মেয়ে আপাদমস্তক বোরখায় ঢাকা, তার একজন পরেই আরেক তরুণী পরণে ছোট শর্টস। মেয়েকে বললাম, ছবি তুলে রাখার মতো দৃশ্য - এই হচ্ছে আমাদের নারী স্বাধীনতার বাস্তব। মেয়ে অবশ্য তখন আমার কাছে আনেডুকেটেড আর ইললিটারেটের মধ্যে পার্থক্য জানতে চাইছিল। আমিও ভাবছিলাম...।

No comments:

Post a Comment