Monday, June 20, 2016

ভাবছিলাম

এভাবে কিছু হওয়ার নয়। হবেও না। আমি তোকে বলেছিলাম। বামপন্থী বলতে যে সৎ সাধারণ আদর্শবাদী মানুষের ছবি চোখে ভেসে ওঠে, তেমন মানুষেরা আজও আছে। শুধু বামপন্থী বলতে আর তাদের কথা মনে হয়না মানুষের। বামপন্থী বলতে ভেসে ওঠে তাদেরই মুখ, ক্ষমতায় টিঁকে থাকার জন্য যাদের আশ্রয় দিয়েছিল, পুষ্ট করেছিল দল। নাহলে অনেক আগেই ক্ষমতাচ্যূত হত। অথচ সেই ক্ষমতাচ্যূত হলোই, তারসঙ্গে মানুষের মনের শ্রদ্ধাটুকুও হারাল। অনেক আগে ক্ষমতাচ্যূত হলে অন্তত বিরোধী রাজনীতি বলে কিছু থাকত। এত বছরে কী হয়েছে বল? একেবারে শুরুতে যেসব কৃষকেরা চাষের জমি নিজেদের বলে পেয়েছিল তা ছাড়া? সেই জমিও আজ তাদের প্রয়োজনের তুলনায় কম। আর যাদের কাছ থেকে জমি কাড়া হয়েছিল তারা কখনওই বামপন্থীদের সমর্থন করবে না। শিল্পের ভরসা দিয়েও আর ফেরানো যাবেনা মানুষকে। তারা হাতে গরম জিনিস পাচ্ছে। সেই সাইকেল, স্কুল ব্যাগ হোক কী চাল। তারা কিছু তো পাচ্ছে, কিছু না পাওয়ার থেকে। রাস্তাঘাট আপাত উন্নত হয়েছে, বিদ্যুৎ এসেছে। দু-একটা উড়ালপুল অমন ভেঙে পড়তেই পারে। মানুষকে সব কিছুই ভুলিয়ে দেওয়া যায় এমন কী মৃত্যুও। কারণ নিজের বেঁচে থাকাটা, আরেকটু ভালো থাকাটা তার কাছে বেশি জরুরি। এই প্রক্রিয়ায় কে কত ঘুষের টাকায় পকেট ভরালো কার তাতে কী?

কংগ্রেস এবং সিপিএম এদের মুশকিল হল, কিছু না কিছু আদর্শ তাদের গায়ে লেগে আছে। ফলে কিছু করলে তার থেকেও বেশি ছি ছি জোটে। আর বাকি দলগুলো যতই নীচে নামুক, মানুষ ভাববে আরে এরা তো এরকমই, বলে পাশ ফিরে শোবে।

মানুষ বুঝে গেছে কেউ তাদের ভালো করবে না। অতএব যা পাওয়া যায় এই বাজারে।

এই সব কিছুর ভবিষ্যত কী, অথবা আদৌ ভবিষ্যত বলে কিছু আছে কিনা ভাবছিলাম। মানে শেষপর্যন্ত কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে, কতটা পাঁকে?

ছোটবেলায় সত্তরের সেইসব দিনের কাহিনি শুনতে শুনতে বড় হয়েছি। হেমাঙ্গ বিশ্বাস, ক্যালকাটা ইউথ কয়ারের গান। আমাদের আগের মানুষদের সামনে স্বাধীনতা সংগ্রামের আদর্শ তখনও খুব স্পষ্ট।

আমাদের সময়টায় খুব বড় কোনও আন্দোলন বা তেমন কিছু হয়নি এইখানে। শুধু আদর্শগুলো টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে গেছে।

কিছুই শেখাইনা আগামী প্রজন্মকে, বেঁচে থাকার লড়াই-এর কঠিন বাস্তবটুকু ছাড়া। তবু কোথাও যেন আশা করি ওরাও স্বপ্ন দেখতে শিখবে।


এই আশাটুকুই যা আছে।

No comments:

Post a Comment