Saturday, June 25, 2016

একটি ‘ভারতী’র জন্য

১৩০৬-এর ভারতী পত্রিকা কোথাও পাচ্ছিলাম না। যাকেই জিজ্ঞাসা করি সেই ন্যাশনাল লাইব্রেরী আর সাহিত্য পরিষদ দেখায়। আরে বাবা ওসব কবেই চষে ফেলেছি। জাতীয় গ্রন্থাগারে নেই আর সাহিত্য পরিষদের কপিটা ড্যামেজড। যারা উত্তরপাড়া ইত্যাদি বলছিল, তাদেরকেও বলেছি বাপু অমন চেনাশোনা সব জায়গা সে কি আর না দেখেছি? চন্দননগর যাব বলে সবে প্ল্যান করছিলাম। শুনেই সোমনাথ (বাংলা রাশিয়ান বই-এর ব্লগের সূত্রে বন্ধুত্ব) হাঁ হাঁ উঠল, এই শরীরে...আমি দেখছি...

একটাই বেশ ভালো কন্ডিশনে কপি ছিল চৈতন্য লাইব্রেরীতে। সেটা প্রায় একবছর ধরে শুনছি মিসপ্লেসড। মাঝে মাঝেই চৈতন্য লাইব্রেরীর অল্পবয়সী যে ছেলেটির হাতে বইটা প্রথমবার দেখে তুলে দিয়েছিলাম, তাকে তুলে আছাড় মারতে ইচ্ছে হয়নি, এমন কথা অস্বীকার করব না। সত্যি বলতে কী মনে মনে ডাকাতির প্ল্যানও করেছি মাঝে মাঝে যে, কী ভাবে ওই লাইব্রেরীতে ঢুকে আগাপাশতলা ঘেঁটে বইটা উদ্ধার করা যায়। মানে ওদেরই দিয়ে আসতাম। আসলে মিনিট পাঁচ-সাত খুঁজে এসে ওই বয়স্ক নির্বিকার মুখ -নাহ্‌, পেলাম না...,  মাথার ভেতরটা কেমন রী রী করে উঠতে থাকে।

বুঝলাম, অতঃপর ফের ছোট শান্তিনিকেতন। ফের অনিচ্ছুক লোকজনকে ধর। যাওয়া-আসা, অন্তত একদিন থাকা...। সেই অবলা বসুর পুনরাবৃত্তি...।

সোমনাথ অনেকদিন আগে অশোক রায়ের নম্বরটা দিয়েছিল। সিঁথিতে ভদ্রলোকের ব্যক্তিগত লাইব্রেরী আছে। ফোনে কথা হয়েছে আগে কিন্তু মোবাইল ঘেঁটে নম্বর পেলাম না। আবার সোমনাথকে মেসেজ, নম্বরটা দাও। উনি বলেছিলেন, ঊনিশ শতকের তেমন কিছু বই-পত্রিকা নেই, অধিকাংশই বিশ শতকের। আর আমি জানি, যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখিও তায়, পাইলেও পাইতে পার অমূল্য রতন ইত্যাদি।

অতএব ছাই উড়াইতে চলিলাম।

১৩০৬-এর ভারতী বলতেই নির্দিষ্ট তাক থেকে বার করে দিলেন। বললাম, আমার উচিত আপনাকে একটা প্রণাম ঠোকা। যাওয়া-আসা, একদিন অন্ততঃ থাকা এই যে এতটা খরচ বেঁচে গেল মোষ তাড়ানোর সে কি কম? তবে উনিও প্রণাম নিলেন না, আর আমিও ওনার গল্পের ফাঁকে ফাঁকে কাজ করতে লাগলাম।


No comments:

Post a Comment