Monday, April 25, 2016

ঘাটে বসে আছি আনমনা...

ছোটবেলায় বড় হওয়া ব্যাপারটা থাকে কেমন অন্য তীর দেখতে না পাওয়ার মতো অসীম। বেলা যত গড়িয়ে আসে, ওপাড়ের তটভূমি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ততো পেছনপানে নজর যায়। একেই বোধহয় বড় হওয়া বলে, অথবা বুড়ো হওয়া।

হার্পার লি-র টু কিল এ মকিং বার্ড-এ একটা কথা আছে, যতক্ষণ না অন্যের জুতোয় পা গলানো যায়, অন্যের শরীরটার ভেতরে ঢুকে না হাঁটা যায়, ততক্ষণ সেই অন্য জনকে ঠিক বোঝা সম্ভব নয়। আর নিজের ক্ষেত্রে বোধহয় যতক্ষণ না নিজের দেহ থেকে বেরিয়ে এসে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে না দেখা যায়, ততক্ষণ।

একেকদিন নিজেকে এভাবে দেখতে ভালোলাগে। যখন মায়ের আঁচলের কথা খুব মনে পড়তে থাকে।
অথবা, ক্যামেরার ফ্রেমের বাইরে চলে গেল যেসব মুখগুলো তারাও কি কিছু রেখে যায়?

ভালোবাসা কোনও এক অনন্ত অনুভূতির মতো। অথচ কখনও তুচ্ছতায় তীব্রভাবে ব্যথিত হয়ে উঠি।
বেদনা ও সুখ আসলে সমান্তরাল সরলরেখা যারা পরস্পরকে ছুঁতে চায় অবিরত।

দুপুরের মহুয়া ফুল না রাতের কামিনী কার গন্ধ বেশি নেশা বা বিষণ্ণতা ধরানো বোঝা যায়না তখন।
যেমন বেশিরভাগ অঙ্ক আমি কোনওদিন মেলাতে পারিনি পরীক্ষার খাতায়।

শেষপর্যন্ত আমি যে বইয়ের চরিত্র তা খুঁজতে থাকি।

টুকরোগুলো জুড়তে জুড়তে কখন যেন আস্ত একটা জীবন হয়ে ওঠে...

আর আমি বসে থাকি একটা শান্ত পরিপাটি বিকেলের অপেক্ষায় যখন আমার স্বজনেরা ঘরে ফিরে আসবে।

মায়ের জ্বালানো ধুনোর গন্ধ আর শাঁখের আওয়াজ ভেসে আসবে ছেলেবেলার পর্দার ওপার থেকে।


এবং সাদা শাড়িতে কোনও জলের দাগ লেগে থাকবে না।

No comments:

Post a Comment