Saturday, April 2, 2016

সাংবাদিকতা

অল্পবয়স থেকে ডাক্তারি এবং সাংবাদিকতা এই দুটো পেশাই আমার খুব ভালোলাগত। এখনও লাগে। এই দুটো পেশাতেই চাইলে অনেক মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া যায়, মানুষের উপকারেও লাগা যায়। একটু দেরিতে হলেও সাংবাদিকতা পেশায় এসে আমার ভালোলেগেছে।

লেখালেখি করতে পারলে বা ক্যামেরার সামনে দু-একটা বাইট দিতে পারলেই সাংবাদিক হওয়া যায় না। যেকোনও জায়গায়, যে কোনও পরিস্থিতিতে হাজির হয়ে খবর সংগ্রহ করার মানসিকতা থাকা দরকার। দরকার বিভিন্ন বিষয়ে ওয়াকিবহাল হওয়া। তবে সবথেকে বড় যোগ্যতা বোধহয় নিস্পৃহতা। যাঁরা খবর দেখেন তাঁরা জানেননা যে সাংবাদিকদের এই নিস্পৃহতা অর্জন করতে কতখানি মানসিক জোর লাগে। বুঝতে পারেননা যে এটাই এই কাজের অঙ্গ। একজন সাংবাদিক যদি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে নিজেই বিচলিত হয়ে পড়েন তাহলে তিনি খবরটা প্রচার করবেন কী করে? আসলে সাংবাদিকতা পেশাটা ঠিক সকলের জন্য নয়। আরও একটা জরুরি বিষয় হল, মিডিয়ার অধিকাংশই স্পষ্টভাবে নাহয় অস্পষ্টভাবে কোনও না কোনও রাজনৈতিক মতালম্বী অথবা সহজভাবে বলা যায় প্রত্যেক মিডিয়ারই নিজস্ব কিছু নীতি আছে। প্রত্যেক মানুষেরও নিজস্ব রাজনৈতিক-সামাজিক ভাবনা থাকে। অনেকসময়েই কাজের নীতির সঙ্গে ব্যক্তিগত নীতি না মিললেও কাজের স্বার্থে তাকে আপোষ করে চলতে হয়। এমন কী যে মিডিয়ার সঙ্গে সে যুক্ত তার কার্যকলাপের জন্য সমালোচনাও শুনতে হয়। এইসবই তার কাজের অঙ্গ। সব পেশাতেই ভালো-খারাপ মানুষ থাকেন। সাংবাদিকতাও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু যেমন কোনও ডাক্তারের দুস্কর্মের জন্য ডাক্তারি পেশাটা খারাপ হয়ে যায় না, ঠিক তেমনি কোনও সাংবাদিকের সমালোচনাযোগ্য কাজের জন্য সাংবাদিকতা পেশাটা খারাপ হয়ে যায় না।


সত্যি বলতে কী আমি মাঝেমধ্যে ছাত্র পড়িয়েছি। ছাত্রছাত্রীদের ভালোবাসা পেলেও শিক্ষকতা বা অন্য কোনও পেশার কথা সেভাবে ভাবতে পারিনি। একসময়ে সরকারি চাকরির চেষ্টা করেছিলাম। তখনও মাথায় ছিল, চাকরি পেলেও লেখালেখি, ফ্রিল্যান্স করে যাব। আমার মনে হয় খুব না ভালোবেসে কারোর এই পেশায় আসা উচিত নয়। একজন সাংবাদিকের কাজ ঘরে বসে সমালোচনা করা খুব সহজ। সাংবাদিক হয়ে ওঠাটা কঠিন।

No comments:

Post a Comment