Wednesday, August 10, 2016

গাছ

মেয়ে একদিন বলেছিল,সবুজ শাড়িতে আমাকে নাকি গাছের মতো দেখায়। ইদানীংকালে আমার প্রোফাইলের সব ছবিই ওর তোলা।

গাছ হলে কেমন হত? মনে হয়েছিল নিজের এই ছবিটা দেখে। ওই যে কাঁধের ওপর সবুজ পাতাটা এসে পড়েছে, ওইটা হয়ত আমারই ডালের। এই যে ঝুপ ঝুপ করে বৃষ্টি পড়ছে অন্ধকার রাত্তিরে, চুপ করে দাঁড়িয়ে ভিজতাম। আচ্ছা গাছেদের কি শীত করে আমার মতো? কে জানে! হয়ত এমন অসুখ করত না সারাজীবন। রোদ্দুর উঠলে হাত পা থুড়ি ডালপালা মেলে দাঁড়িয়ে হয়ত আপন মনে ভাবতাম আর ডালে ডালে পাখির কিচিরমিচির কানে বাজত। পাতা ঝরত, নতুন পাতা গজাত। ফুলও ফুটত হয়ত। আচ্ছা তাকেই কি বলা যায় হাসি? কেউ কি এসে থমকে দাঁড়াত গাছতলায়,চেনা চেনা লেগে? কে জানে!

হয়ত তারপর গাছের গায়ে চকখড়ির দাগ পড়ত একদিন। বিষ দেওয়া হত শিকড়ে। আস্তে আস্তে হলুদ হয়ে ঝড়ে পড়ত সব পাতা। ন্যাড়া শুকনো আধমরা গাছটা বেশ কিছুকাল একা একা দাঁড়িয়ে রোদে পুড়ত,ভিজত জলে। তারপর তাকে কেটে টুকরো করে নিয়ে যাওয়া হত অন্য কোথাও। আর তার জায়গায় উঠত কংক্রিটের ব্রিজ অথবা চওড়া রাস্তা,বাঁধানো ফুটপাত দখল করত তার ভূমি।

অনেক গভীরে তার রয়ে যাওয়া কোনও শুকনো শিকড়ের গায়ে কি লেগে থাকত রক্ত অথবা অশ্রুর দাগ,সকলের অজান্তে?


কিন্তু এইসব তো কেউ জানতে পারত না কোনদিনই। গাছেদের কথা অথবা কান্না যে কেউ শুনতে পায়না, পড়তে পারে না তাদের শব্দ,অক্ষর,বর্ণমালা।

No comments:

Post a Comment