এতদিন পর রূপনারায়ণপুর গিয়ে আমার সবচেয়ে যেটা চোখে লেগেছে
তা হল, এত বছরেও শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য এই দুটো জায়গায় কোনো
নূন্যতম উন্নতি হয়নি। এটা পশ্চিমবঙ্গের সার্বিক চিত্র। শিক্ষিত হওয়া আর সাক্ষরতার
মধ্যে ঢের তফাত। রাজনৈতিক দলগুলো শুধুমাত্র সাক্ষরতাকে শিক্ষা বলে চালানোর প্রাণপন
চেষ্টা করে যাচ্ছে দীর্ঘদিন যাবত। অথচ বাদবাকী সব সমস্যার মূল এই শিক্ষার অভাব।
কোন রাজনৈতিক দলই কিন্তু সাধারণ মানুষের প্রকৃত শিক্ষা চায় না - এরা যত বেশি জানে, তত কম মানে।
অথচ, এই যে লোকসংখ্যা বেড়ে যাওয়া, হিন্দু-মুসলিম বিভেদ, কম বয়সে বিয়ে দেওয়ার রেওয়াজ, মেয়েদের ওপর অত্যাচার, সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের মান
উন্নয়ন না হওয়া এমন সমস্ত সামাজিক, অর্থনৈতিক সমস্যার পিছনেই রয়েছে এই
প্রকৃত শিক্ষার অভাব। ক্রমশঃ যা দাঁড়াচ্ছে রাজনৈতিক দল, শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান কোথাও আর শিক্ষিত বলে কিছু থাকছে না। ক্রমশঃ শিক্ষিতরা বিলুপ্তপ্রায়
প্রজাতিতে পরিণত হচ্ছে।
নারী শিক্ষার অবস্থা আরো শোচনীয়। যারা লেখাপড়া শেখার সুযোগ
পাচ্ছে না তাদের কথা তো বাদই দিচ্ছি, যারা লেখাপড়া শিখেছে তাদেরও একটা
বড় অংশই অশিক্ষিতই রয়ে গেছে। ঊনবিংশ শতকের শিক্ষিত বাঙালি মেয়েদের চিন্তাভাবনার
কথা যত পড়ি ততই এটা বুঝতে পারি যে এই একশো-দেড়শো বছরে আমরা মানসিকভাবে কতটা
পিছিয়েছি।
আবার নতুন করে শিক্ষার প্রসার এবং বিশেষতঃ নারী শিক্ষার
প্রসার খুব জরুরি হয়ে পড়েছে।
No comments:
Post a Comment