এইসবই
আমার শোনা কথা, তবু মনে প্রশ্ন জাগে। শুনেছি বাম
আমলে পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষের বিঘে বিঘে জমি সিপিএম দখল করেছিল। তাই তারা বা
তাদের উত্তর পুরুষেরা কখনওই আর সিপিএম-কে ভোট দেন না। মানে দেবেনই বা কেন? তাঁদের রাগের তো সঙ্গত কারণ আছে। কখনও যদি সিপিএম-কে ভোট দিলে
তা পশ্চিমবঙ্গের ভালো হয় তাও দেবেন না। অবশ্যই ব্যক্তিস্বার্থ আগে। সেটাই তো
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির মূল সূত্র।
আর আমরা
যাদের পূর্বপুরুষেরা ভিটে-মাটি উচ্ছেদ হয়ে এক বাংলা থেকে অপর বাংলায় এসেছি, আমাদের অনেকেরই ওরকম বিঘে বিঘে জমি ছিল ও বাংলায়। শুনেছি
আমার দিদা ডঃ বেণীমাধব বড়ুয়ার মেয়ে, তাঁকেও বোরখা পরে বাংলাদেশ ছাড়তে হয়েছিল। অথচ এখনও বোধহয় আমার দাদুদের সেই
মুৎসুদ্দি পাড়া রয়েছে ওখানে। আমার ঠাকুরদাদাদের জমিদারী ছিল সে কথা না বলাই ভালো, কারণ পশ্চিমবঙ্গে একটা বিশ্রী ব্যঙ্গ আছে এই বাঙালদের নিয়ে
যে তারা সকলেই নাকি দাবি করে যে তাদের পূর্বপুরুষ ওপার বাঙলায় জমিদার ছিল।
আমরা
এখনও অধিকাংশই ভিটে-মাটির মালিক হয়ে উঠতে পারিনি বাম-ডান কোনও আমলেই। এখনও আমরা এই
বাঙলায় চিহ্নিত এবং কিছুটা ব্রাত্য 'বাঙাল' বলে। হয়ত আমাদের মধ্যে সেটা
কিছুটা গর্বও কাজ করে কারোর কারোর। কিন্তু আমি ভাবি, আমরা কার বিরুদ্ধে অভিযোগ করব? আমাদের তো শুধু ভিটে-মাটিই যায়নি, আমাদের শিকড় চলে গেছে। আমরা ওই বাংলায় 'পশ্চিমবঙ্গের লোক' আর এই বাংলায় 'বাঙাল'।
আমি কেন
ভোট দেব কাউকে?
No comments:
Post a Comment