চারদিকে লাসের
মিছিল – এরাও মানুষ ছিল। থেঁতলে যাওয়া হাত-পা-মাথা, টুকরো টুকরো
শরীর...। সনাক্তকরণে ওরা আমাদের বাপ-মা, ভাই-বোন। পুড়ে যাওয়া কয়লার পিণ্ডের মতো শুয়ে আছে সন্তানেরা। এরপর আমাকে তোমরা ভালো
থাকতে বোলো না; বোলো না সুখে, শান্তিতে এবং নিরাপদে দিন কাটাতে।
বুলেটের
শব্দ, বিস্ফোরণের ধ্বনি-প্রতিধ্বনি মাথার ভেতরে, রক্ত আর চোখের জলের নোনতা স্বাদ
অনুভবের সবটুকু জুড়ে; পোড়া মাংসের গন্ধে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে আসতে আমাকে আর যাইহোক
ভালো থাকতে বোলো না।
কিছুক্ষণ
বিষন্নতায় ডুবে যেতে দাও, নিজের মুখোমুখি আরও গভীরে। কিছুই পারছিনা যখন। কলম ছাড়া
আর কোনও শানিত অস্ত্র নেই আমার হাতে। তাই নিরুপায়ের মতোই লিখে যাই, শাস্তি হোক,
শাস্তি হোক। অথচ কে কাকে শাস্তি দেয়? চিরকাল ক্ষমতারা বীণাই বাজায়। আমাদেরই রক্ত-ঘামে
গড়ে ওঠা সাম্রাজ্যে আমরাই দোষী সাব্যস্ত হই, এটাই নিয়ম।
আগামীকাল
আমার টুকরো টুকরো লাস যখন বয়ে নিয়ে যাবে, কী ভীষণ ব্যঙ্গের মতো তোমাদের কানে বাজবে
এই ‘ভালো থেকো’-র বর্ণমালা - আজকের দিনটায় বেঁচে যাওয়ার চরম ঠাট্টার মতো।
নাহয়
ভালো থাকতে পারলামই না আজীবন, সাবধানে, সুখে, শান্তিতে। কিছুই তো
পারলাম না। শুধু সেই কবে থেকে বোকা এক মানুষের মতো ভালোবাসা খুঁজে ফিরি। লোভ ও
ঘৃণার বিরুদ্ধে আমাদের শেষ হাতিয়ার।
No comments:
Post a Comment