সবেতেই ছন্দ থাকে। ঠিক ঢাকা ঠিক বোতলের মাথায় না লাগলে ছন্দ
কাটে। ছন্দ ভাঙে তরকারির পাত্রের ঠিক ঢাকাটা ঠিক পাত্রের ওপর না বসলেও। ছন্দ কাটলে
মাথার মধ্যে বিষম কষ্ট হয়। তখন অন্য সব বোতল হাতড়ে কী রান্নাঘর, ফ্রিজের তাকে তাকে
ছন্দ খুঁজে বেড়াতে হয়। বই পড়া আর ওষুধ খাওয়া পাশাপাশি চলায় মনের ভুলে পেজমার্কের
বদলে বইয়ের পাতায় ঢুকিয়ে দিই ওষুধের খালি ফয়েল। মেয়ে রেগে যায় ভীষণ। আমি বুঝতে পারি
ওর মাথার মধ্যে ছন্দপতন ঘটছে। খালি ফয়েল ফেলে পেজমার্ক দিই। খুশি হয়ে ওঠে সে।
নিমপাতার সঙ্গে মাংসের কী ছন্দ মেলে জানিনা, কিন্তু আমার তেঁতো প্রিয় হলেও ও
এভাবেই না ভালোলাগাটা মেলাতে চেষ্টা করে। যেমন, চুলের সঙ্গে চিরুনির ছন্দটা ও
কিছুতেই মেলাতে পারেনা বলে মা রাগ করলে বাতাসে রুক্ষ্ম চুল ওড়ে, নাহলে মায়ের হাতে
সযত্নলালিত হয়।
জীবনের ছন্দ নিয়ে লিখতে থাকলে এই লেখাটা অনন্ত হতে পারত।
কিন্তু আমি তো লিখছিলাম ছন্দপতন নিয়ে। মাথার মধ্যে মাঝে মাঝেই একটা তীব্র অস্থিরতা
কষ্ট দিতে থাকি। ঠিক বুঝি ছন্দ ভাঙছে, চুরমার হয়ে যাচ্ছে মস্তিষ্কের কোষে কোষে।
কোথায় যে ভাঙছে, ঠিক কোনখানে তা আর খুঁজে পাইনা। সেই না খুঁজে পাওয়ার অস্বস্তি
ছড়িয়ে পড়ে সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে। আমি হাতড়ে বেড়াই জীবনের আদিগন্তে।
No comments:
Post a Comment