আমাদের এদিকে অনেক বাসস্ট্যান্ডে নতুন করে চেয়ার আর হোর্ডিং
হয়েছে। সেসব ভালোই। যদিও চেয়ার না পেতে পুরোনো যে কম খরচের টানা লোহার বেঞ্চিমতো
থাকত সেটাই ভালো ছিল। এখন তো বাসস্ট্যান্ড দেখলে মনে হয়না কোথাও আর যাই, ভাবি
খানিকক্ষণ বিশ্রাম নিই, তারপরে বাসে ওঠা যাবেখন। সে নাহয় হল। এইসব বাসস্ট্যান্ডের
গায়ে, মানে পেছনের দিকে এক এক জন মহান মানুষের ছবি, এবং তাঁর উক্তি বা তাঁর
সম্বন্ধে কোন কথা। আর মাথার ওপর হোর্ডিং-এ মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এবং স্থানীয়
বিধায়কের ছবি। তাও নাহয় হল।
বাসে করে যেতে যেতে চোখে পড়ল দমদম পার্ক বাসস্ট্যান্ডের ছবি
ও লেখাতে। ক্ষুদিরামের পাশে লেখা – হাঁসি হাঁসি পড়ব ফাঁসি দেখবে জগতবাসী।
ভাবি কারা যে এদের মাথায় দেশপ্রেম ঢুকিয়েছিল কে জানে! একে তো অল্পবয়সে মারা গেল,
তার ওপর মরেও শান্তি নেই। কোথাও ভগৎ সিং হয়ে ঝুলে থাকতে হয় তো কোথাও হাঁসতে হয়
এইসব দেখে।
যাঁরা দেশপ্রেম নিয়ে খুব মাতামাতি করছেন, তাঁরা একবার ভেবে
দেখতে পারেন, এই হচ্ছে ভবিষ্যত। অতএব দেশপ্রেম খাবেন না মাথায় দেবেন আগে ভাবুন
একটু। হাসবেন না হাঁসাবেন?
বিদ্রঃ দেশপ্রেমের বিপরীত আবার দেশদ্রোহী ভেবে বসবেন না
যেন। আমার বাসভূমি পৃথিবী আর তাকে বাঁচিয়ে রাখার নৈতিক দায়িত্ব আমার, খণ্ড খণ্ড
জমির ওপর অধিকার কায়েমের লড়াই না করে, যে লড়াইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পৃথিবী এবং
বিপন্ন হচ্ছে মানব প্রজাতি – একথা ভাবাটাই খুব জরুরি এখন।
No comments:
Post a Comment