একটা পোস্ট দেখলাম,
তাতে লেখা বাংলা ভাষাদিবস অথচ তারিখটা ইংরেজি। হয়তো আন্তর্জাতিক তকমা পেয়েছে তাই। প্রথম
থেকেই কি বাংলা কোনও তারিখ ছিল না, কে জানে! সকাল থেকে একেকবার মোবাইলে ফেসবুক খুলছি
আর ভাষাদিবসের চমকে বন্ধ করে রাখছি।কলকাতার রাস্তায় বেরোলে আজকাল বাঙালি কাউকেই প্রায়
বাংলা বলতে শুনিনা, এমন কী নিজেদের মধ্যেও। ভাবছিলাম...
ভাষাদিবস, এপার বাংলা
অন্যদিন তো মনেই পড়ে না মা।
আজ সকাল থেকেই তোমায় নিয়ে
হইচই, কত কথা ও কবিতা, গান!
অন্যদিন তোমায় মনে পড়ে না মা -
অফিসে যাই অথবা ছেলেমেয়ের ইংরেজি ইস্কুলে।
রাস্তায় যেতে যেতে মেয়ের বন্ধুর মায়ের সঙ্গে
ইংরেজি আর হিন্দি মিশিয়ে কথা বলি যখন –
ভদ্রমহিলা অবাঙালি, উনি কিন্তু হিন্দিতেই উত্তর দেন।
রাস্তায়-ঘাটে দোকানে-বাজারে ইংরেজি বা হিন্দি
ছাড়া কিছুই বলি না, পোশাকে-আশাকেও তাই –
পাছে কেউ আনস্মার্ট অথবা বাঙালি ভাবে।
তুমি আমার মা - প্রাণপনে ভোলার চেষ্টা করি।
নেকটাই গুঁজে যখন ইন্টারভিউ দিতে যাই –
আমি এবং ওপক্ষের সবাই ছেলেবেলায়
মা কে ‘মা’ অথবা ‘আম্মা’
ডেকেছিলাম।
এখন অবশ্য মুখোমুখি কথা বলি ইংরেজিতেই।
চাকরিটা যে বড্ড জরুরি। ওরা কী ভাববে!
বাঙালি হলেও সাহেবদের তো ইংরেজিটাই চলে।
আর তুমি দেখে নিও, এই দিনে, ঠিক এই দিনে
সকাল থেকেই মনে করব আমরা বাঙালি।
কারা যেন ওদেশে এই ভাষার জন্য মরেছিল!
একদিনের জন্য ওই গর্বটুকু, ঐতিহ্যের আঁচটুকু
যেন ফসকে না যায়। বাংলা ভাষা, মা আমার,
আমরাও তোমারই সন্তান। দেখ ভুলে যেও না যেন।
আমরা তো আজ সকাল থেকে কেবলি তোমার কথাই
বলে চলেছি, কবিতায়, গানে, বা আর যা যা কিছু সম্ভব -
ধুতিতে-শাড়িতে, নিদেন পক্ষে অ আ ক খ লেখা স্কার্টে।
ও মা, তোর চোখে কেন জলের ধারা?
No comments:
Post a Comment