ইদানীং
আমার নিজের ফেসবুক প্রোফাইলের ছবিতে চোখ গেলেই নিজেকে কেমন ‘আবোল তাবোল’-এর ন্যাড়ার
মত লাগছে। যে কেউ আমার হাসিটা একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, পুরো ন্যাড়ার হাসি। ওই যে,
যে কী না পৃথিবীটা যদি চ্যাপ্টা হত আর সব জল গড়িয়ে ডাঙায় চলে আসত আর লোকজনে ধপাধপ
ধপাধপ আছাড় খেতো ভেবে হেসে গড়াগড়ি দিচ্ছিল। আজকাল আমারো মাঝে মাঝে ওরকম ইচ্ছা হয়
বৈকী। আর একেবারে নেড়ার মতোই বাজে বকছি।
ধরুন,
তৃণমূলের নেতা কেউ বক্তৃতা দিচ্ছে এবারের বর্ষায় আর কোথাও সাধারণ মানুষকে জলে
হাবুডুবু খেতে হবে না, আর ওমনি রে রে করে বৃষ্টি এসে মঞ্চটঞ্চ সব ভেঙে জলে পুরো
ভেসে গেল। আর নেতা আর তার চ্যালাচামুণ্ডারা সৌখিন সুগন্ধী মাখানো জামা-প্যান্ট পরে
কাদাতে সব ধপাধপ ধপাধপ আছাড় খেতে লাগল। (এটা শুরুর দিকে কিন্তু সিরিয়াসভাবে পড়তে
হবে)
না ভাই,
না ভাই আমাকে গান গাইতে বোলো না। আজকাল আমি আর গান গাইনে। gun লেখেন এবং gun আমাদের দিদি।
সে কী সব মধুর সুর আর মোলাম কথা যে কোথাও শিশি-বোতলের মতো ঠেকবে না। (এইখানে যাদের
কাছে দিদির কবিতার বই আছে তারা খুব মোলাম সুরে দু-একটা চেষ্টা করে দেখতে পারেন,
আমার কাছে নেই কী না, তাই ঠিক কোন গানটা এখানে মানাবে লিখতে পারলাম না)
এই না
বলে তো রামছাগলটার মতো ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদে উঠলাম। সেটা দিদির কবিতার শোকে, না
কী বাড়ির সামনে নর্দমা মেরামত করছে বলে বারবার আছাড় খাওয়ার আশঙ্কা থেকে অথবা হাতের
ব্যথায় তা ঠিক বলতে পারব না। ইদানীং প্রায়ই আমার ওই ছাগলটার মতো কান্না পায়, যার
ভাই না কে আধখানা বার সাবান খেয়ে নিয়েছিল, তাতে আধখানা মরে গিয়েছিল, একদম ওই
কান্না। বাঁহাত অবশ হয় আছে, বাঁ পা খোঁড়াচ্ছে আর ডানদিকটার তাই ভারী কষ্ট হচ্ছে।
(এইখানটায় ভীষণ সিরিয়াস কাঁদো কাঁদো গলায় না পড়লে কিন্তু কিছুতেই হবে না)
সেদিন
রাস্তা দিয়ে আসছিলাম, আমি আর মেয়ে। একটা কালো বেড়াল চোখে পড়ল তার একটু একটু সাদা।
বুই বলছিল মনোক্রোমাটিক বেড়াল। আমি বললাম, ফটোক্রোমাটিক বেড়াল হলে ভালো হতো না কি?
দিনের বেলা রোদ্দুরে কালো হতো আর রাত্তিরে ছাই ছাই। মেয়ে বলল, এ কি তুমি চশমা
পেয়েছ না কি? বললাম, আহা একটা রুমাল হলেই তো মিটে যায়।
যাকগে
ঢের রাত হলো এবারে চশমা খুলে বেড়াল ভুলে রুমাল দিয়ে মুখ মুছে ঘুমিয়ে পড়ি। কালকে
আবার কী হয়, গেছোদাদা কী করে, উধোতে বুধোতে ঝটাপট ঝটাপট লাগে কী না...সে অনেক
চিন্তার ব্যাপার থাকে, নিত্যি থেকেই যায়...এরই নাম তো জীবন থুড়ি আবোল-তাবোল।
সক্কালবেলায়
ঘুম থেকে উঠে দেখি, ঘুমের ঘোরে 'আবোল তাবোল', 'হ য ব র ল' সব কেমন গুলিয়ে গেছে। যা দিনকাল
পড়েছে একেবারেই অবাক হলাম না। নিত্যি জেগে জেগে গুলিয়ে যায় আমি রুমাল না বেড়াল? ঠিক কোথায় আছি, হ য ব র ল অথবা আবোল তাবোলে? গেছোদাদা ঠিক
বলছে না বিরিঞ্চিবাবা? ওদিকে হর্ষবর্ধন
আর গোবর্ধন দৌড়চ্ছে তো দৌড়োচ্ছে, চোর-ডাকাত সব
পড়ে রইল।
হঠাৎ শুনি কে যেন হেঁড়ে
গলায় বলে উঠল, সাত দুগুনে কত হয়? চোদ্দো বলি আর মরি আর কী, কোনো হিসেব এখন আর অত সহজ নয়। যদি ওটা চোদ্দো কোটি হয়
তাহলে সি বি আই এলে রাখব কোথায়? আমার তো দিদিও নাই, কমোডও নাই। এইবেলা তাই হুস হুস করে কাকটা তাড়িয়ে শুকনো রুটি চিবোতে বসলাম।
No comments:
Post a Comment