“কাকটা ভারি অবাক হয়ে বলল,“তোমাদের দেশে সময়ের দাম নেই বুঝি?”
আমি
বললাম,“সময়ের দাম কিরকম?”
কাক বলল,“এখানে কদিন থাকতে,তা হলে বুঝতে। আমাদের বাজারে সময় এখন ভয়ানক মাগ্যি,এতটুকু বাজে খরচ করবার জো নেই। এই তো কদিন খেটেখুটে
চুরিচামারি করে খানিকটে সময় জমিয়েছিলাম,তাও তোমার সঙ্গে তর্ক করতে অর্ধেক খরচ হয়ে গেল।” বলে সে আবার হিসেব করতে লাগল।”
আর আমি
ব্যাঙ্ক-এর লাইনে দাঁড়িয়ে মাথা চুলকাতে চুলকাতে ভাবতে লাগলাম, ‘সময়ের দাম’ কাকে বলে? এই যে এতগুলো লোক কাজ-কম্ম, অফিস-কাছাড়ি চুলোয় তুলে সকাল থেকে রাত্তির এই এটিএম থেকে
সেই এটিএম, ব্যাঙ্ক থেকে পোস্টাফিস ছুটে
বেড়াচ্ছে,
ঘন্টার পর ঘন্টা লাইন দিচ্ছে তাদের কারোর কি সময়ের দাম নেই? যে সাধারণ মানুষগুলোর এই টাকার চক্করে কাজ চলে গেল সেই
কাজের সময়গুলোর দাম কে দেবে? ওই যে লোকগুলো
লাইন দিতে গিয়ে ঝুপ ঝুপ করে মরে যাচ্ছে ওদের জীবনের দাম?
কিছুতেই
আর সময়ের জমা-খরচের হিসেবটা মেলাতে পারছি না। কাক্কেশ্বরকেও আজকাল আর দেখা যাচ্ছে
না বিশেষ। নিশ্চয় নতুন দুহাজার টাকার ভাঙতি না পেয়ে বাজারি কাগজে পোস্ট এডিটোরিয়াল
লিখছে পেন্সিল ঠুকে।
ভাবছিলাম
একবার গেছো দাদার কাছেই নাহয় যাব। ভাবতে ভাবতেই শুনি তিনি ভিক্ষের ঝুলি নিয়ে
গিয়েছেন জাপান। তারপর সেখান থেকে ফিরে...
নাহ্, কোথাও কোনও লাইনে এখনও দাদার দেখা পাইনি। দাঁড়িয়ে আছি তো
দাঁড়িয়েই আছি। ওদিকে হুসহুস করে সময় চলে যাচ্ছে...
No comments:
Post a Comment