Sunday, September 24, 2023

জাতীয় গ্রন্থাগার

আমাদিগের ভ্রমণবৃত্তান্ত এর কাজটা করতে গিয়ে জাতীয় গ্রন্থাগারের অভূতপূর্ব সাহায্য পেয়েছি। কত যে দুষ্প্রাপ্য প্রায় হাত দেওয়া যায় না এমন পত্রিকাও হাতে করে এনে দিয়েছেন, রেয়ারে দুটো পত্রিকা চাইলে চার-পাঁচখানা এনে দিয়েছেন। কম্পিউটার সেকশনে খুঁজে দিয়েছেন সিডির পর সিডি। কীভাবে কাজটা এগোবো তার সুপরামর্শ দিয়েছেন। এখনও যখনই কাজে যাই সকলেই যথাসম্ভব সাহায্য করার চেষ্টা করেন। খুব খারাপ কন্ডিশনের বই এখন আর সহজে পাওয়া যায় না, নিয়মের কড়াকড়ি হয়েছে, তাই সেরকম একটি বইয়ের স্ক্যানের অনুরোধ জানিয়ে এসেছিলাম। খবর পেলাম স্ক্যান হয়ে গেছে, এবারে গেলে দেখা যাবে। বাড়ি বসেই খবরটা পেয়ে যারপরনাই আনন্দ পেলাম। 

Thursday, May 7, 2020

অনেকদিনপর - বেঁচে ওঠার কথা

একটা সিনেমা দেখছিলাম। সেখানে নায়ক কিছুতেই একটা দিনকে পেরিয়ে পরেরদিনে যেতে পারছে না। সেই একইদিনেরই পুনরাবৃত্তি ঘটছে। প্রথমে সে ক্রমশ বিষণ্ণ হয়ে পড়ছিল। আত্মহত্যার চেষ্টা করছিল। কিন্তু কিছুতেই তবু দিনটা পেরোতে পারছিল না। তারপরে সে সেই দিনটুকুতেই বাঁচতে শুরু করল। নানাকিছু নতুন জিনিস শিখল, মানুষকে ভালোবাসল এমন নানাকিছুর মধ্যে দিয়ে, আশার মধ্যে দিয়ে বাঁচতে শুরু করল। আর ঠিক তখন একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখল একটা নতুন দিন শুরু হয়েছে।

ডায়েরি লিখব ভেবেছিলাম। এইসময়ের। এই করোনাকালের। কিন্তু নানা ব্যস্ততায় লেখা হল না। আজও ডায়েরি লিখতে বসিনি। লিখছিলাম বাঁচার কথা। এই যে দেশময় একটা আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে একেবারে সরকারিভাবেই। আর মানুষ সেই মরে যাওয়ার আতঙ্কে অন্য মানুষের দিকে ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখছে, ভাবছিলাম তার থেকে বেঁচে ওঠার কথা। জোর করে এই লকডাউনে কী লাভ হচ্ছে? আরেকটু ভয়ে ভয়ে বেঁচে থাকা ছাড়া। অথচ সেই সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট, সেই ঘটনাই ঘটতে চলেছে। আমাদের মধ্যে যাদের শরীরে যথেষ্ট প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকবে তারাই বেঁচে থাকবে, হয়ত করোনা ভাইরাস শরীরে নিয়েই, আর যাদের সেই প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই তারা বাঁচবে না। তারমধ্যে আমিও থাকতে পারি। কিন্তু সেই মৃত্যুভয় নিয়ে আজকের দিনটা বাঁচব না কেন? 

ভাবছিলাম বেঁচে ওঠার কথা। আসলে আমরা অনেকদিন হল মরে গেছি। এই একটা সুযোগ এসেছে বেঁচে ওঠার। পরেরদিনে এগিয়ে যাওয়ার। 

এরই মাঝে মানুষে মানুষে ধর্মের নিরিখে ঘৃণার যে বীভৎস চিত্রটা গত কদিন দেখছি, শুনছি, পড়ছি তারপর মানুষ হিসেবে আদৌ আমরা বেঁচে আছি কিনা সেটাই সন্দেহ হচ্ছে। খুব উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে একথা মানুষের মনে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে এদেশে করোনা ছড়াচ্ছে মুসলমানেরা। তারা করোনা ছড়িয়ে হিন্দুদের মেরে ফেলার চেষ্টা করছে। কী আশ্চর্য যেন মুসলমানদের ইমিউনিটি ক্ষমতা এত বেশি যে ওদের কিছু হবে না। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে জামাতের ঘটনা মিডিয়া হাইলাইট করছে। চেপে দেওয়া হচ্ছে হিন্দুদের নানা জনসভার কথা। নকল মুসলিম সেজে হিন্দু সেন্টিমেন্টে আঘাত করছে কিছু বিশেষ দলের লোকজন। আর মানুষ সেসবই বিশ্বাস করছে। আর ঘৃণা বাড়ছে, শুধুই ঘৃণা।

আমি তো কেবল জীবন্ত মানুষের লাশ দেখতে পাচ্ছি। মানুষ হিসেবে যারা মরে গিয়েছে অনেকদিন। 

ভাবছিলাম বেঁচে ওঠার কথা। এর থেকে বেঁচে ওঠা। 

বাঁচার যে অন্য মানেও হয়।

পরেরদিন দেখার জন্য।


অবলা দাশ ও ব্রাহ্মসমাজ



একটা জায়গায় সংশোধন হবে। দ্বারকানাথ ঠাকুর নয় দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর হবে।https://www.facebook.com/groups/1675834865971345/permalink/2647373618817460/

Friday, December 29, 2017

বছরশেষে


কিছুতেই পৌঁছেতে পারি না আকাঙ্ক্ষিত শব্দের কাছে। শুধু পুড়ে যাই

শব্দের ঘরবাড়ি বানাই, সিঁড়ি আঁকি মুঠো ভরি শব্দের বৃষ্টিফোঁটায়।

তবু পারি না

দিনশেষে, বছরশেষে দেখি শূন্য খাতা, অর্থহীন আঁকিবুকি কাটা।

পৌঁছতে পারি না আকাঙ্ক্ষিত শব্দের কাছে

তবু লিখি, লিখে যাই পুড়িপুড়ে যাইএবং রক্তপাতে।

Friday, December 1, 2017

চিত্রকর


কত যে ছবি আঁকে চেনা মানুষ

কাগজে কলমে আর ক্যানভাসে;

আমিও চিত্রকর অচেনা এক

কী যেন খুঁজে ফিরি কোন আশে!

তুলির টানে সাজে শব্দেরা

বর্ণমালারা আঁকে ছেঁড়া চাদর,

রঙের ঝাপটা কালো আঁকিবুকি

গদ্য-কবিতায় ভরা আদর।

কত যে ছবি আঁকে চেনা মানুষ

শব্দ আলো জ্বালে সাদা খাতায়;

আমি যে চিত্রকর অচেনা এক

সামিল হয়েছি আজ সেই হাঁটায়।


বিষণ্ণতার তুলির রেখা


শীতের বেলার হাতে একটা বিষণ্ণতার তুলি আছে। রোজ সে দুপুরের ঝলমলে রোদ্দুরের ক্যানভাসে এক একটা তুলির টান দেয় আর একটু একটু করে রোদ্দুর মুছে সন্ধ্যা নেমে আসে। একেবারে শেষে বেশ কিছুটা অন্ধকার নিয়ে ঝুপ করে বুলিয়ে দেয় যেন। আর অমনি একটা ঠান্ডা মনখারাপ চেপে বসে বুকের ঠিক মধ্যিখানে। কখন অন্ধকার হয়ে যায়।

পতাকাহীন


লেকটাউনের মুখে এসে দেখি একদল মানুষ চলেছে মিছিল করে। অনেক মানুষ। অথচ তাদের হাতে কোনও পতাকাও নেই, মুখে কোনও স্লোগানও নেই! নিজেরা হাসতে হাসতে গল্প করতে করতে চলেছে। কেউ বা চুপচাপ। অথচ মিছিল করেই যাচ্ছে।

ভারী আশ্চর্য লাগল। ঠাওর হল না কিচ্ছু। নাহ, বিয়েবাড়ির দল, পুজো কিছুই না। স্রেফ পতাকাহীন একটা মিছিল কেমন আমাকে পেরিয়ে চলে গেল। একটুু এগোতে আবার একটা দল। এটা একটু ছোট অবশ্য।

ভাবি, অনেকদিন পর মানুষের মিছিল দেখলাম! এমন কেন হয় না লাল নীল গেরুয়া সবুজ সব পতাকা ফেলে মানুষ শুধু মানুষ হয়ে পথে নামবে ওই পতাকাধারী ক্ষমতালোভীদের বিরুদ্ধে।

পতাকাও তো মানুষকে আলাদা করে ধর্মের মতোই।